Uncategorized

ফেসবুক এ্যাড একাউন্ট বারবার ডিজেবল কেন হয়? ও এর সমাধান কী

চলমান সময়ে ফেইসবুক একটি বহুল ব্যবহৃত মাধ্যম।ফেইসবুক দিন দিন ডিজিটাল বিঞ্জাপণের ক্ষেত্রে একটি বিশাল মাধ্যম হয়ে উঠতেছে যার অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে ফেইসবুক এর খরচ অন্যান্য মিডিয়ার তুলনায় কম। আপনি খুব সহজেই ফেইসবুক এর মাধ্যমে অতি অল্প সময়ের মধ্যে আপনার পণ্য বা সেবার নাম ছড়িয়ে দিতে পারবেন দেশের প্রায় ৩ কোটির ও বেশি ব্যবহার কারীর মাঝে। 

কিন্তু ফেসবুকে এই বিজ্ঞাপন দেওয়ার কাজটি সহজ হলেও কিছু নিয়ম-নীতি মেনে আপনাকে এ্যাড রান করতে হবে যা আপনার জন্য বা একজন সাধারণ ব্যবসায়ী বা উদ্যোক্তার জন্য মেনে চলা কঠিন ও সময়সাপেক্ষ।  আবার সময়ের সাথে সাথে  প্রতিনিয়তই আপডেট হচ্ছে নিয়ম-নীতি গুলো। আর এই নিয়ম-নীতি না মেনে বিজ্ঞাপন চালালে সাম্প্রতিক যে সমস্যা গুলি দেখা দিচ্ছে তা হলো: 

১. আপনার এ্যাড একাউন্টি হঠ্যাৎ করেই ডিজ্যাবল হয়ে যাওয়া  অথবা এ্যাডভার্টাইজিং রেস্ট্রিকডেট হয়ে যাওয়া। 

২. আপনার এ্যাড পোস্টি রান হতে কিছু সময় নিতে পারে।

৩. পেমেন্ট সংক্রান্ত নানা রকমের সমস্যা হওয়া

৪. এ্যাড পোস্ট থেকে কাঙ্ক্ষিত বা আশানুরূপ ফলাফল না পাওয়া

৫. একই ধরনের ভূল করার কারনে এ্যাড ব্যান হওয়া

৬. প্রতিষ্ঠানের ডোমেইন ব্যান হওয়া অথবা  ইউআরএল ব্যান হওয়া।

বর্তমান সময়ে ফেসবুকের ব্যবসা বা বিজ্ঞাপনের মাত্রা অত্যধিক বৃদ্ধি পেয়েছে  যার ফলে তারা বিভিন্ন ধরনের আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স (এআই) বসিয়েছে। যেই গুলির মাধ্যমে তারা  বিভিন্ন যাচাই প্রক্রিয়া সম্পাদন করে থাকেন । যার ফলশ্রুতিতে অতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কারণে অনেক ধরনের এ্যাড বা কনটেন্ট প্রতিনিয়ত রিজেক্ট হচ্ছে । যার দরুন ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। ফেসবুক এড একাউন্ট বারবার ডিজেবল হয়ে যাওয়ার কিছু কারণ জানা গিয়েছে-

ক. পেমেন্ট সঠিকভাবে না করা: ফেসবুক বিজ্ঞাপনের জন্য ভ্যাট প্রদান বাংলাদেশে বাধ্যতামূলক। বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা  এই ভ্যাট ফাঁকি দিতে  অনুমোদন বিহীন আন্তর্জাতিক পেমেন্ট গেটওয়ে বা অন্য দেশের ক্রেডিট/ডেবিট কার্ড ব্যবহার করেন। আর ঠিক এজন্যই তাদের এ্যাড একাউন্টি ডিজেবল হয়ে যায়। আর এই সমস্যার সমাধান হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদিত ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার করে পেমেন্ট প্রদান করা।

খ.আমরা অনেক সময় আমাদের অনেক ব্যবসায়িক প্রয়োজেনে একাধিক ফেসবুক পেইজ ক্রিয়েট করে থাকি এবং একটি মাত্র এ্যাড একাউন্ট থেকেই ওই সমস্ত পেইজের বিজ্ঞাপন চালানো শুরু করি। তাই  একের অধিক পেইজের বিজ্ঞাপনের জন্য আলাদা আলাদা একাউন্ট ওপেন করে নেওয়া উচিত নয়তো একাউন্টি ডিজেবল হয়ে যাবে ।

গ. ফেসবুকে এ্যাড প্লেসমেন্ট এর অনেক গুলি ক্যাটাগরি রয়েছে। যার  মধ্যে ৩টি ক্যাটাগরি হচ্ছে স্পেশাল যেই  ক্যাটাগরি গুলিকে স্পেশাল ক্যাটাগরি হিসেবে এ্যাড করা হয়েছে। আর আপনার পণ্য বা সেবার নামের  বিঞ্জাপনটি  যদি এই ৩ তিন ক্যাটাগরির মধ্যে যেকোন একটি হয় তবে তার জন্য আপনাকে অবশ্যই স্পেশাল এ্যাড ক্যাটাগরি সিলেক্ট করে এ্যাড প্লেস করতে হবে। 

এই  তিনটি ক্যটাগরি হলোঃ

১) হাউজিং: অর্থ্যাৎ প্রপার্টি বিজনেস। আপনি যদি প্রপার্টি নিয়ে কোন এ্যাডদিতে চান তবে আপানার জন্য এই ক্যাটাগরিটি প্রযোজ্য হবে।

২) এ্যড বা বিঞ্জাপনটি  বীমা বা ঋণ নিয়ে হলে এই ক্যাটাগরিতে পড়বে।

৩) জব প্লেসমেন্ট : আপনি যদি কোন জবের জন্য কর্মী নিয়োগ দিতে চান তবে এটিও স্পেশাল ক্যাটাগরির মধ্যে গণ্য হবে।

.ফেইসবুক বিজ্ঞাপনে কপিরাইট বিষয়টি এখন অনেক গুরুত্বের সাথে দেখা হয়। এইজন্য কোন এ্যাড পোস্টে কপি করা কোনো প্রকার ইমেজ ও লেখা ব্যবহার করা যাবেনা। আর ইমেজের ব্যাবহার করার ক্ষেত্রে সঠিক সাইজ ও অল্প লেখা ব্যবহার করতে হবে। পোস্টে কোনো ওয়েব ইউআরএল শর্টার অ লুকএলাইক স্প্যামিং লিংক ব্যবহার করা যাবেনা। পোস্টে কোন প্রকার টাকার এমাউন্টের গ্যারান্টেড অফার বা লটারী অথবা জুয়ার মতো কোন কনটেন্ট ব্যবহার করা যাবে না।

ঙ. ফেইক প্রোফাইল ব্যবহার করে এ্যাড দেওয়া: 

আমাদের মধ্যে বেশির ভাগ লোকই  সঠিক তথ্য দিয়ে প্রোফাইল ক্রিয়েট করে না। বিভিন্ন কারণে বিভিন্ন ফেইক তথ্য দিয়ে প্রোফাইল ক্রিয়েট করে থাকে। বিশেষ করে ফেসবুকের নাম এবং জন্মতারিখের সাথে আইডি কার্ডের নাম এবং জন্মতারিখের কোনো প্রকার মিল তারা রাখে না!  আবার অনেকে দেখবেন একই ব্যক্তির নাম, ছবি ও তথ্য ব্যবহার করে একাধিক আইডি খুলেন। যে সকল কারণে আইডিগুলো রেস্ট্রিকটেড বা ডিজেবল হলে  রিভিউ দেওয়ার পরও আইডি ফিরে পাচ্ছেন না। সুতরাং  সঠিক তথ্য দিয়ে একটি প্রোফাইল আইডি ওপেন করতে হবে।

চ) ফেসবুকের বিজ্ঞাপন নীতি ভায়োলেট হলেঃ

আপনি যদি আপনার ফেসবুক বিজ্ঞাপন ম্যানেজার অ্যাকাউন্ট  খোলার আগে ফেসবুক বিজ্ঞাপন নীতিগুলি না পড়ে থাকেন তবে ভবিষ্যতে  ভূল থেকে বাঁচতে আমরা আপনাকে ফেসবুকের বিজ্ঞাপন নীতিগুলি পড়ে নেয়ার পরামর্শ দিই। ফেসবুকের বিজ্ঞাপননীতি ভায়োলেট করার কারনেই অনেকের ফেসবুক এড একাউন্ট ডিজেবল হয়ে যাচ্ছে। তাই এড প্রচারের আগে এই নীতিমালাগুলো খেয়াল রাখুন।

ছ)ফেসবুক কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড লঙ্ঘনঃ

ফেসবুক কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ডের ক্ষেত্রেও খুবই সতর্ক থাকতে হয়।ফেসবুকের কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ডে বলা আছে কি ধরনের বিজ্ঞাপন সেখানে অনুমোদিত ও কোনগুলো নয়। আপনার ফেসবুক বিজ্ঞাপন অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় করার আরেকটি কারণ হতে পারে  আপনার ব্যবসায়িক পেইজ, বিজ্ঞাপন বা অন্য কোন ধরনের সামগ্রী যা আপনি কখনও পোস্ট করেছেন এবং সেটা হয়তো কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড ভায়োলেট করেছে।তাই সতর্ক থাকুন বিষয়টিতে।

ফেসবুক এড একাউন্ট ডিজেবল হয়ে যাওয়ার এই কারণগুলো সলভ করার মাধ্যমেই নিজের এড একাউন্টকে সুরক্ষা দিতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *