Uncategorized

বিজনেস শুরু করতে বিজনেস কনসালটেন্টের সাথে পরামর্শ কেন প্রয়োজন?

বিজনেস শুরু করা ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে পরিচালনার ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর বুঝতে ও সঠিক পরামর্শ পেতে আপনার একজন প্রফেশনাল বিজনেস কনসালটেন্ট এর সাথে পরামর্শ করা খুবই প্রয়োজনীয়। বিজনেস কনসালটেন্ট হলো এমন একজন পেশাদার ব্যাক্তি যিনি সঠিক পরামর্শ ও গাইডলাইন দেওয়ার মাধ্যমে আপনার কোম্পানি বা বিজনেসকে সুন্দরভাবে পরিচালনা ও উন্নয়ন সাধনে সহায়তা করবে।এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে জানতে পারবেন, একজন প্রফেশনাল বিজনেস কনসালটেন্ট কি এবং কেন ব্যাবসা পরিচালনায় একজন বিজনেস কনসালটেন্টের পরামর্শগ্রহন করা দরকার।

বিজনেস কনসালটেন্ট আসলে কী?

একজন বিজনেস কনসালটেন্ট হলো এমন একজন পেশাদার ব্যাক্তি যিনি ব্যাবসায়িক কর্তৃপক্ষকে তাদের এনালাইসিসের ভিত্তিতে পরামর্শ দিয়ে তাদের ব্যাবসায়ীক সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করে।এমনকি ব্যাবসার কোনো সিদ্ধান্ত বা কোনো কিছুতে সামান্যতম ত্রুটি থাকলেও বিজনেস কনসালটেন্ট তা খুব সহজেই তার বিচক্ষণতার মাধ্যমে খুজে বের করে।

একজন বিজনেস কনসালটেন্ট এর কাজ সাধারণত কী কী?

বিজনেস কনসালটেন্টরা আপনার ব্যবসার যে কোনো ধরনের পরামর্শগত প্রয়োজনে খুব ভালোভাবে সাহায্য করতে পারে।  কিছু কিছু বিজনেস কনসালটেন্টরা বিশেষ বিশেষ ইন্ডাস্ট্রির ব্যাপারে খুব বেশি ধারনা রাখেন তথা নির্দিষ্ট বিজনেস ইন্ডাস্ট্রির ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ।আবার কেউ কেউ সাধারণভাবে সব ধরনের ইন্ডাস্ট্রির ব্যাপারেই ধারনা রাখেন।বিজনেস কনসালটেন্টরা বিভিন্ন ধরনের সেবা প্রদান করেন।কিছু সাধারণ সার্ভিসের কথা নিচে লেখা হলোঃ

১)কোম্পানির সমস্যা ও বাধাগুলি চিহ্নিত করা

২)কোম্পানির উন্নতির লক্ষ্যে কী ধরনের পরিবর্তন করা দরকার তা নির্ধারণ করা এবং পরিবর্তনগুলি বাস্তবায়নে মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করে  সহায়তা করা

৩)কর্মীদেরকে বিজনেস পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ এবং ম্যাটারিয়াল প্রদান করা

৪)একটি ব্যবসায় খুব ভালো উন্নতি করার জন্য বাক্সের বাইরে আইডিয়া বের করা

৫)ব্যবসায়িক পরিকল্পনা এবং নতুন ব্যবসা তৈরিতে সহায়তা করা

৬)নতুন নতুন প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন

৭) কোম্পানির বাজেট বিশ্লেষণ করা ও সমন্বয় করার জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করা

বিজনেস কনসালটেন্টদের সুবিধা কি?

 – একজন  বিজনেস কনসালটেন্ট নিয়োগ করা একটি কোম্পানিকে অনেক সুবিধা প্রদান করতে পারে।  সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণগুলির মধ্যে রয়েছে কোম্পানির বাইরের দৃষ্টিভঙ্গির সুবিধা গ্রহণ করা, অন্যান্য ক্লায়েন্ট এবং ইন্ডাস্ট্রির কাছ থেকে নেওয়া অন্তর্দৃষ্টি এবং দক্ষতা ব্যবহার করা, পরিকল্পনা তৈরিতে সহায়তা গ্রহণ করা এবং সেগুলি সংঘটিত করার জন্য সংস্থান এবং আরও অনেক কিছু।  বৃহত্তর বোঝার জন্য নীচে কিছু নির্দিষ্ট উদাহরণ দেওয়া হল।

১) একজন ব্যবসায়িক পরামর্শদাতার একটি সক্রিয় ও সৃজনশীল মাইন্ড এবং দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে, যা তাদের এমন সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম জিনিসগুলিও ফোকাস করতে দেয়  যা সাধারনত ব্যবসার মালিকরা তেমন একটি নাও করতে পারে।তাই বিজনেস কনসালটেন্টের ফোকাসকৃত সূক্ষ্ম পয়েন্টগুলো বিজনেসের খুব ভালো উন্নতি ঘটাতে পারে।

২)বিজনেস কনসালটেন্টরা প্রায়ই একাধিক ইন্ডাস্ট্রির সাথে এবং বিভিন্ন ধরনের ক্লায়েন্টের সাথে কাজ করে। এর ফলে তারা অনেকগুলো উৎস থেকে ব্যাবসায়ীক অভিজ্ঞতা ও ধারনা  লাভ করতে পারে। তারা অন্যান্য ইন্ডাস্ট্রি থেকে প্রাপ্ত দক্ষতা বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রিতে ব্যবহার করতে পারে।

৩)আপনার জন্য আপনার কোম্পানির ব্যাবসায়ীক প্রচারণা এবং ব্যবসায়িক পরিকল্পনা ডিজাইন করা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে এবং এটি প্রচুর সময়সাপেক্ষ ব্যাপারও বটে।কিন্তুু বিজনেস কনসালটেন্টরা এই পরিকল্পনাগুলি আরও দ্রুত এবং স্পষ্টভাবে সম্পাদন করতে সহায়তা করে এবং তারপরে আপনাকে সেগুলি কাজে বাস্তবায়নেও সহায়তা করবে।

৪) বিজনেস কনসালটেন্টরা আপনার কোম্পানির শক্তিশালী পয়েন্টগুলো এবং দুর্বলতাগুলি সহজেই চিহ্নিত করতে পারেন যা আপনার পক্ষে খুজে বের করা হয়তো অনেক জটিল।

৫)বিজনেস কনসালটেন্টরা আপনার টাকা ব্যয়ের ক্ষেত্রে দুর্বল খাতগুলো খুঁজে পেতে সাহায্য করতে পারে এবং সেই খাতগুলির জন্য সৃজনশীল কিছু ইফেক্টিভ সমাধান প্রদান করতে পারে।যেন ব্যায়ের পরিমান কমিয়ে বেশি লাভবান হওয়া যায়।

৬)বিজনেস কনসালটেন্টরা আপনার কাঙ্খিত ক্লায়েন্টকে নিয়ে গবেষণা করে এবং তাদের আকৃষ্ট করার জন্য একটি টার্গেটেড মার্কেটিং প্ল্যান তৈরি করে বিক্রয় বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।

৭) সময় বাঁচিয়ে অন্যান্য লাভজনক দিকে  ফোকাস করার সুযোগ পাবেন

ইন্ডাস্ট্রির ম্যানেজারদেরকেই সাধারনত কোম্পানির সবধরনের সমস্যা দেখভাল করতে হয়।যা একজন ম্যানেজারের জন্য খুবই কঠিন হয়ে যায়। এতে ম্যানেজারের ক্রিয়েটিভ এবং ইউনিক আইডিয়া বের করাটা কঠিন হয়ে পরে।  অথচ ব্যাবসার প্রোডাক্টিভিটি বাড়াতে নির্দিষ্ট কিছু সমস্যা সলভ করার জন্য নির্দিষ্ট কিছু ব্যাক্তির কাজ করা উচিত।যদিও বেশিরভাগ কোম্পানিই এটা করতে পছন্দ করে না, কারণ এটি ব্যয়বহুল হয়ে পড়ে। যাইহোক, একজন বিজনেস কনসালটেন্ট নিজের দক্ষতা ও সময় ব্যাবহার করে সারা বিশ্বের অন্যান্য কোম্পানির ডেটা সংগ্রহ, কোম্পানির সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নসহ ইউনিক আইডিয়া প্রদানের কাজও করেন। ব্যবসার মালিক বা ম্যানেজার এই সময়টি ব্যবসার অন্যান্য দিকগুলোতে ফোকাস করতে পারেন যা উচ্চ মুনাফায় অবদান রাখে।

৮)আপনি নতুন কিছু বিজনেস স্কীলের সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পাবেন

যে কোনও ব্যাবসায়িক পরামর্শদাতা বা বিজনেস কনসালটেন্টের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা হ’ল ব্যবসায়িক কৌশল, পলিসি এবং চাহিদার ভিত্তিতে ব্যবসাটির ক্রমশ উন্নতি সাধন করা।যখন একজন পরামর্শদাতা এই পদ্ধতিগুলিকে কাজে লাগান,তখন কোম্পানির একজন মালিক বা ব্যাবস্থাপক হিসেবে ব্যাবসায়ীক সিদ্ধান্তে পৌছুতে  কোন কোন প্যারামিটার তারা কীভাবে ব্যবহার করেছে সে সম্পর্কে একটি গভীর ব্যাখ্যা চাওয়া খুবই সাধারণ ব্যাপার।তার কাছ থেকে ব্যাখা জানার মাধ্যমে কোম্পানির শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিদের জন্য এটি নতুন ব্যবসায়িক পরামর্শের দক্ষতা শেখার সঠিক একটি সময়।  এই দক্ষতাগুলি পরবর্তীতে দীর্ঘমেয়াদে কাজে লাগাতে পারবেন।এমনকি  যদি ব্যাবসায়িক পরামর্শদাতা চলে যান বা তাদের চুক্তির মেয়াদ শেষও হয়ে যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *